সদরঘাটে জবি শিক্ষার্থীদের বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর, আহত ৯

বঙ্গ পত্রিকা,ডেস্ক
বঙ্গ পত্রিকা ছবি:
বঙ্গ পত্রিকা ছবি:

ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বিএনপি-সমর্থিত নেতাকর্মীদের হামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন কলেজের অন্তত নয়জন আহত হয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সুন্দরবন-১২ লঞ্চ ঘেরাও করে ভাঙচুর চালালে ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং যাত্রীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। বৃহস্পতিবার রাতে সদরঘাটের ১ নম্বর ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সদরঘাটের ইজারাদার ও বিএনপিপন্থি দক্ষিণাঞ্চল শ্রমিকদলের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়ার অনুসারী কিরণের নেতৃত্বে একদল বিএনপি নেতাকর্মী এ হামলা চালায়। হামলায় অংশ নেয় কিরণ, আজিজুল, রমজান, আনিছ, রফিক, কাদের, রাব্বি ও সাগরসহ আরও কয়েকজন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জবির ফিন্যান্স বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাবিল বরিশালগামী সুন্দরবন-১২ লঞ্চে ওঠেন। এসময় লঞ্চের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিএনপি-ঘনিষ্ঠ কর্মীরা তাকে জোর করে কেবিন ভাড়া নিতে বাধ্য করতে চাইলে তিনি অস্বীকৃতি জানান। এনিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে তাকে মারধর করেন। খবর পেয়ে সহপাঠীরা ছুটে গেলে তাদেরও লাঞ্ছিত করা হয়।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— নাবিল (ফিন্যান্স, ১৮তম ব্যাচ), শের আলী (আইএমএল, ১৮তম ব্যাচ), ব্রজ গোপাল রায় (সংগীত বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), জিলন (এমসিজে, ১৮তম ব্যাচ), ইমরোজ সিদ্দিক (আইন, ১৯তম ব্যাচ), আনিছ (থিয়েটার, ১৯তম ব্যাচ), টিঙ্কু (ফিলোসফি, ১৮তম ব্যাচ), মাকসুদুল হক (ইসলামিক স্টাডিজ, ১৪তম ব্যাচ), রিহাব (কবি নজরুল কলেজ) ও মুজাহিদ (সোহরাওয়ার্দী কলেজ)। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় সুমনা হাসপাতালে।

এর পরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সুন্দরবন-১২ লঞ্চ ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেন। এতে লঞ্চ চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

বরিশালের যাত্রী রাজীব বলেন, আমরা টিকিট কেটে লঞ্চে উঠেছি। হঠাৎ সংঘর্ষ ও ভাঙচুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এখন টিকিটের টাকাও ফেরত পাব কি না, জানি না।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচজনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. তাজাম্মুল হক ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ঘটনার বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি তুলেছে। আমরা সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

তাদের দাবিগুলো হলো: কিরণকে দ্রুত সময়ে অ্যারেস্ট করতে হবে; তার সহযোগীকে অ্যারেস্ট করা; সিসিটিভি ফুটেজ চেক; ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মোবাইল মানিব্যাগ ক্ষতিপূরণ; সাধারণ মানুষের হয়রানি ও কুলিদের অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করতে হবে।

সর্বশেষ এখন পুলিশ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের দাবি জানানোর পরপরই ঘটনার মূল হোতা সুমন ভূঁইয়ার অনুসারী কিরণকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিষয়:

বিএনপি
এলাকার খবর

সম্পর্কিত