১৮ বছর পর মোরেলগঞ্জে বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল: রাজনৈতিক অঙ্গনে উৎসবের আমেজ

মাসুম বিল্লাহ (বঙ্গ পত্রিকা)
 ছবি: বঙ্গ পত্রিকা
ছবি: বঙ্গ পত্রিকা

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকা মোরেলগঞ্জে দীর্ঘ ১৮ বছর পর আগামী শুক্রবার (১৫ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা বিএনপির বহুল প্রত্যাশিত দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল। এ কাউন্সিল ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ।

শেষবার ২০০৭ সালে উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠিত হয়েছিল, যেখানে সভাপতি হন সাবেক এমপি ড. মিয়া আব্বাস উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক হন শহিদুল হক বাবুল। এরপর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক চাপ, গায়েবি মামলা ও হামলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। অনেক নেতাকর্মী এলাকা ছেড়ে চলে যান, হারান রাজনৈতিক প্রভাব।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও তৎকালীন সরকারের পতনের পর বিএনপি মোরেলগঞ্জে নতুন উদ্যমে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও ১৪৪ ওয়ার্ডসহ পৌরসভায় ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন শেষে এবার উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চূড়ান্ত কাউন্সিল।

এবারের কাউন্সিলে ১ হাজার ১৩৬ জন ভোটার অংশ নেবেন এবং সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দুই সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচন করবেন। সভাপতি পদে লড়ছেন ৩ জন—শহিদুল হক বাবুল, অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল ও এফ.এম শামীম আহসান। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফকির রাসেল আল ইসলাম, মো. আফজাল জোমাদ্দার ও অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান ইয়াদ। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন ৬ প্রার্থী, যার মধ্যে রয়েছেন অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন টুলু ও অধ্যাপক ফায়জুল হক।

দুটি শক্তিশালী প্যানেল ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়েছে—একটির নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কাজী খায়রুজ্জামান শিপন এবং অপরটির নেতৃত্বে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম।

কাউন্সিল ঘিরে চলছে বিরামহীন প্রচারণা, পথসভা, উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মতিউর রহমান বাচ্চু জানান, “১৮ বছর পর বিএনপির কাউন্সিল হতে যাচ্ছে—এটি আমাদের জন্য উৎসবের দিন। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ আগস্ট মোরেলগঞ্জ হবে বিএনপির মিলনমেলা।”

নিরাপত্তা, অতিথি আপ্যায়ন ও মিডিয়া কাভারেজে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ কাউন্সিল শুধু নেতৃত্ব নির্বাচন নয়—এটি মোরেলগঞ্জ বিএনপির রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের সূচনা হতে পারে।

বিষয়:

সারাবাংলা
এলাকার খবর

সম্পর্কিত