শনিবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ , বিকাল ০৪:২৮


সংজ্ঞা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট - বদলে যাও, বদলে দাও

রিপোর্টার : মাসুম বিল্লাহ
প্রকাশ : শনিবার , ৯ নভেম্বর ২০২৪ , সন্ধ্যা ০৭:৫৮
প্রিন্ট ভিউ

রাষ্ট্রীয় চারটি নীতির মধ্যে গণতন্ত্র হচ্ছে অন্যতম মূলনীতি।রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক ধারণার এক বহিঃপ্রকাশ হলো‘গণতন্ত্র’।বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন হয়েছে।বাংলাদেশের ইতিহাস দেখলে মুঘল শাসন,সুলতানি শাসন,ইংরেজ শাসন ও সর্বশেষ পাকিস্তানি শাসন।রাজা চেয়েছে তার প্রজাকে বিভিন্নভাবে শাসন করতে।নিজেদের ক্ষমতার বিস্তার ঘটাতে,আর প্রজা চেয়েছে তাদের অধিকার,তাদের পাওনা।রাজা একদিকে প্রজাদের শোষণ করেছে আর অন্যদিকে বছরের পর বছর প্রজা চেয়েছে এ শোষণের হাত থেকে মুক্ত হতে।এভাবে শাসন ও শোষণের নিগড় থেকে বিভিন্ন সময় দেশের জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে এবং এসেছে গণতন্ত্র।গণতন্ত্র মানে হচ্ছে জনগণের শাসন।যে সরকার ব্যবস্থায় জনমতের প্রাধান্য থাকে ও জনগণের প্রতিনিধি দ্বারা শাসনকার্য পরিচালিত হয়,তাই গণতন্ত্র।গণতন্ত্র হলো এমন একটা বিষয় যেখানে জনগণই প্রধান।যেখানে আছে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা।গণতন্ত্রের জনক বলা হয় আব্রাহাম লিংকনকে।গণতন্ত্রের জন্য আব্রাহাম লিংকনের সংজ্ঞাই সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয়।তিনি বলেছেন,Government of the people,by the people for the people.উপরোক্ত সংজ্ঞা থেকে আর যা যেমন-তেমন এ কথা স্পষ্ট হয় যে,গণতান্ত্রিক দেশে জনগণই সর্বেসর্বা।রাষ্ট্রের প্রতিটি কাজে জনগণের উপস্থিতি থাকতে হবে।জনগণের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই।গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ধর্ম,বর্ণ,গোত্র,ধনী-দরিদ্র,নারী-পুরুষ কোনো ভেদাভেদ বা বৈষম্য থাকে না।সর্বক্ষেত্রেই সবাইকে সমদৃষ্টিতে দেখা হওয়ার কথা।কিন্তু আমাদের দেশে তার ঠিক উল্টো।একটা কথা না বলে পারছি না।আমার মাইগ্রেনের সমস্যা।ক্লাস থ্রিতে পড়ার সময় এটা ধরা পড়ে।একটু রোদে গেলেই চোখের শিরা ফুলে উঠত,কোনো কিছুর দিকে একটানা খানেক ক্ষণ তাকিয়ে থাকলেই চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে চোখে যন্ত্রণা শুরু হতো।হারিকেনের আলোয় পড়তাম আমি।কিন্তু আমার থেকে কিছুটা দূরে হারিকেন রেখে পড়তে হতো।কেননা আলো মোটেও সহ্য হতো না।হঠাৎ করে যেকোনো সময় চোখের যন্ত্রণা বেড়ে যেত।ক্লাস ফোরে পড়াকালীন সময়ে অনেক ডাক্তার দেখিয়ে ছিলেন আমার আব্বু। আমার এ সমস্যা নিয়ে আমার মা খুবই দুশ্চিন্তায় থাকতেন সব সময়।এমনকি এখনো।অবশেষে যশোর কপতাক্ষ লাইয়ন্স চক্ষু হাসপাতালে গেলাম ২০২২ সালে। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানালেন চশমা ব্যবহার করতে হবে।সেখান থেকে গরুর ঠুসির মতো চশমাটা আমার নাকের ওপর একদম যেন চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করে নিল।এখন অবধি আছে।যাই হোক,আসল কথা হলো।আমার এ চোখের জন্য ছোটবেলা থেকে বহু ডাক্তার,কবিরাজ এমনকি মা মানুষের কথা শুনে অনেক মোল্লা-মৌলবির সান্নিধ্যেও নিয়েছিলেন আমাকে কিন্তু কোনো ফায়দা হয়নি।তিন মাস পর যখন আবার ডাক্তারের কাছে গেলাম।ডাক্তার স্পষ্ট ভাষায় জানালেন চোখের লেন্স দুর্বল।তিন মাস পর পর চশমার পাওয়ার চেঞ্জ করতে হবে।সেই থিওরির ওপর এখনো বেঁচে আছি আশপাশ দেখে।আমাদের বাজারের মোড়ের ওখানে একটা হোমিও ডাক্তার চেম্বার খুলে বসে থাকত।এখনো আছে।ডাক্তারের জীবনীটা সংক্ষেপে বলি,ডাক্তার মশাই ২০০৪ সালে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অন্য বন্ধুদের মতো কলেজে ভর্তি না হয়ে গ্রামেরই মোড়ে হোমিও ওষুধের চেম্বার খুলে বসেছে।আমি একবার চোখ দেখাতে গিয়েছিলাম।একবার ওষুধ দিয়েই আমাকে দিয়ে জোর করিয়ে স্বীকার করাতে চেষ্টা করেন যে রোগ সেরে গেছে।ডাক্তার বললে তো হবে না।বলতে হবে ভুক্তভোগী রোগীকে যে রোগ সেরেছে নাকি বেড়েছে।গণতন্ত্রের মানে এই না যে,জনগণকে দিয়ে জোর করে স্বীকার করাতে হবে যে এটা গণতান্ত্রিক দেশ বা গণতান্ত্রিক শাসন।তার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে নাকি উন্নত হয়েছে।সাধারণ মানুষ বলবে যে,তারা সুখে-শান্তিতে আছেন সেটা শুনে কেন আমরা তাদের সুখ কিংবা শান্তি মেপে ফেলব।আমাদের কি চোখ নাই যে দেখে বুঝতে পারব না কে সুখে আছে আর কে নেই।চাপে পড়ে নয়,মনের থেকে বলা কথাই বিবেচনা করা হবে।মহান সেই কর্ণধারদের কাছে আকুল আবেদন,সব রেষারেষির অবসান ঘটিয়ে এমন একটা গণতান্ত্রিক দেশ সাধারণ জনগণকে উপহার দিন,যে উপহারের কথা জনগণের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ।যে দেশে মানুষ নিজের ভালোমন্দ,ন্যায়-অন্যায়ের সঠিক মাপকাঠি নিয়ে চলতে পারবে।তবেই দেশে শান্তি বিরাজমান হবে ইনশাআল্লাহ।