গাইবান্ধার জেলার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুকিতুর রহমান রাফি ও দুই সংবাদকর্মীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১০ বছর আগে জামায়াত নেতার ছেলের ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগে এই মামলাটি করা হয়।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) এই মামমলার বিষয়টি গোবিন্দগঞ্জ থানা থেকে জানানো হয়। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই তাহসিনুর রহমান দায়িত্বে আছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে এই থানায় মামলাটি করেন তাহারাত তানভীর প্রধান (২৭) নামের এক যুবক। তিনি গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ধনকুঠি (শিল্পপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমীর ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন্নবী প্রধানের ছেলে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- কামারদহ ইউপি সদস্য মিন্টু শেখ (৫০), জিন্না মণ্ডল (৫৫), জহুরুল ইসলাম সবুজ (৩৭), খাইরুল ইসলাম মুক্তা (৫৬), স্থানীয় সংবাদকর্মী মোস্তফা কামাল সুমন (৪৫), রায়হান ফরহাদ লিখন (৪৫), সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা রাফসান জানি স্বর্নাভ (৩৭), গোলাম আযম কান্না (৫৫), তাহেদুল ইসলাম (৫০) ও কাজী হোসাইন আহম্মেদ (৬০)। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আসামিদের সঙ্গে তার বাবা নুরুন্নবী প্রধানের রাজনৈতিক ভিন্ন মতবাদের কারণে ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল দুপুর ২টায় গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের সামনে হকিস্টিক, লাঠি, ছোরা, ডেগারসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোটরসাইকেলসহ তাকে ঘেরাও করে পথরোধ করে। এসময় মুকিতুর রহমান রাফির নির্দেশে মিন্টু শেখ ও মোস্তফা কামাল সুমন তাকে হত্যার উদ্দেশে ডেগার দিয়ে বুকের বামপাশে চোট মেরে গুরুতর জখম করে। তখন তার বাবার রাজনৈতিক সহকর্মী বাবর আলীর ছেলে রুহুল আমিন তাকে রক্ষা করতে আসলে মোস্তফা কামাল সুমন ও জিন্নাহ মণ্ডল মিলে রুহুল আমিনের দুই হাত চেপে রাখে।
এদিকে মিন্টু শেখ ও রায়হান ফরহাদ লিখন তাদের হাতে থাকা হকিস্টিক দিয়ে রুহুল আমিনের বাম পায়ে গুরুতর আঘাত করে। রাফসান জানি স্বর্নাভসহ অন্যান্য আসামিরা মিলে বাদীর ব্যবহৃত বাজার চ্যাম্পিয়ন ১০০ সিসি মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়৷ আশপাশে থাকা অন্যান্য আসামিরা মিলে তাদের দুজনকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন তাদের উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে তানভীরকে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রুহুল আমিনের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরের দিন তাকে বগুড়ায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী তাহারাত তানভীর প্রধান বলেন, ১০ বছর আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তখন মামলাটি রেকর্ড না হওয়ায় এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালে গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালতের সামনে হামলা ও মারধরের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।